ঘূর্ণিঝড় মোখা অর্থ কি?

ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আঘাত হানছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। এবং ধারনা করা হচ্ছে অন্যান্য দেশ গুলোর মতো বাংলাদেশও আঘাত হানতে পারে এই ঘূর্ণিঝড় মোখা। আমরা আমাদের এই পোস্টটিতে ঘূর্ণিঝড় মোখা সম্পর্কে সম্পূর্ণ বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করবো। আপনারা যারা ঘূর্ণিঝড় মোখা সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক তারা অবশ্যই আমাদের পোস্টটি শুরু থেকে শেষ অব্দি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। 

ঘূর্ণিঝড় সিডর, ইয়াস, আইলা, মহাসেন, বুলবুলের আঘাতের ক্ষত এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি উপকূলীয় উপজেলার মানুষেরা। এরই মধ্যে এবার চোখ রাঙাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সামুদ্রিক ঝড় ‘মোখা’। আবহাওয়া অধিদপ্তর আভাস দিয়েছে, আগামী ১৪-১৬ মের মধ্যে উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে এই ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। আবহাওয়া দপ্তর এই পূর্বাভাস দিয়ে উপকূলীয় এলাকার মানুষের কপালে চিন্তার ধারা এনে দিয়েছে।

অতিপ্রবল বেগে ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। রোববার (১৪ মে) সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল ঘূর্ণিঝড় মোখা।

মোখা ঘূর্ণিঝড় অর্থ কি?

ইয়েমেনের একটি বন্দর শহরের নাম হচ্ছে মোখা। ইয়েমেনের লোহিত সাগর উপকূলে শহরটি অবস্থিত। মুলত সেই শহরের নাম অনুসারেই এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখা হয়েছে মোখা। বিশ্বের কাছে শহরটি কফির বাণিজ্যের জন্য সুপরিচিত। কফির উৎপাদন এবং সারাবিশ্বে সরবরাহের কাজ করা হয় এই শহরটি থেকে। ইয়েমেনে অবস্থিত একটি সমুদ্র রয়েছে যার নাম মোখা। আর এই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে ঐ সমুদ্র থেকে যার কারনেই ঘূর্ণিঝড়টির নাম রাখা হয়েছে মোখা। 

মোখা ঘূর্ণিঝড় অর্থ কি?

উত্তরঃ ইয়েমেনের লোহিত সাগর উপকূলে মোখা শহরটি অবস্থিত। মুলত সেই শহরের নাম অনুসারেই এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখা হয়েছে মোখা।

বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের জন্য ১৩টি দেশের সুপারিশ করে থাকে। এই নামকরণে বাংলাদেশসহ এই তালিকায় রয়েছে ভারত, ইয়েমেন, কাতার, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। আর এই ঘূর্ণিঝড়টির নাম করণ করেছে ইয়েমেন কারন সেখান থেকেই সৃষ্টি হয়েছে মোখা নামে ভয়ানক এই ঘূর্ণিঝড়। 

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব

ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে কক্সবাজারে প্রায় ২ হাজার ৫২২টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। শুধু সেখানেই প্রায় ৭০০ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এর বাইরে ক্ষতিগ্রস্থ টেকনাফ ও উখিয়ায় বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আরোও দেখুন>

টেকনাফে প্রায় ৫০০ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। মহেশখালীসহ অন্যান্য উপজেলাগুলোতে ৫০-৬০টি করে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর এখন পর্যন্ত  পাওয়া গেছে। এবং কুতুবদিয়ায় ঝড়ের গতিবেগ কম থাকায় ক্ষয়ক্ষতিও সেখানে তুলনা মুলক কম হয়েছে। 

ঘূর্ণিঝড় মোখার সতর্কবার্তা

ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশের ভূখণ্ড থেকে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর। উক্ত সংস্থাটির পরিচালক আজিজুর রহমান রোববার (১৪ মে) রাত ৮ টায় গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন। তিনি জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা আমাদের দেশ থেকে পুরোপুরি চলে গেছে। আমাদের ভূখণ্ডে এই ঘূর্ণিঝড়ের আর কোন অস্তিত্ব নেই। এদিকে কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরের ওপর ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

তবে এই ঝড় চলে গেলেও সেটার প্রভাবে আগামী কয়েকদিন থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সাথে আগামী ২৪ ঘণ্টায় সমুদ্র উত্তাল থাকার কারনে সমুদ্রে মাছ ধরতে আপাতত না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঝড় চলে যাওয়ায় অতিবৃষ্টি বা ভূমি ধ্বসের সম্ভাবনাও তেমন নেই বলে ধারনা করছেন আবহাওয়াবিদরা। 

আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আপনার একটি শেয়ারে পোস্টটি দেখতে পারবেন আরো অনেকেই। প্রতিনিয়ত যেকোনো ধরনের আপডেট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।  

ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে কিছু প্রশ্ন উত্তরঃ

ঘূর্ণিঝড় মোখার অর্থ কি?

ইয়েমেনের লোহিত সাগর উপকূল থেকে সৃষ্টি হওয়ার কারনে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরন করা হয় মোখা।

ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিবেগ/ গতিপথ 

এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিবেগ/ গতিপথ ঘণ্টায় ৫১ হতে ৬১ কিলোমিটার পর্যন্ত।

Leave a Comment