বাঙালী জাতীয়তাবাদের জনক কে?

বাঙালি জাতীয়তাবাদ হল আমাদের অতীত ঐতিহ্যের নিজস্ব সংস্কৃতি, সমাজ ব্যবস্থাপনা, রাষ্ট্রগঠন, ধর্ম ও প্রচলিত রীতিনীতি ইত্যাদি নিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছে। আমাদের পূর্ব পুরুশদের দৈনদিন জীবন ব্যবস্থা সম্পর্কে এবং নিজেদের পরিচয় বহনে জাতীয়তাবাদের গুরুত্ব অপরিসীম।

প্রথম বাঙালি জাতীয়তাবাদের জনক বলা হয় রাজা রামমোহন রায়কে। চলুন তাহলে বিস্তারিতভাবে বাঙালী জাতীয়তাবাদ ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের জনক সম্পর্কে জেনে আসা যাক। 

বাঙালি জাতীয়তাবাদ 

সহজ ভাষায় বাঙালি জাতীয়তাবাদ বলতে বাঙালি জাতির নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, বুদ্ধিমত্তা তথা নিজস্ব জাতিসত্তাকে বোঝায়। জাতীয়তাবাদ সকল মানুষ ও সমাজকে ঐক্যবদ্ধ, নিজস্ব আত্মপরিচয়, রাজনীতি, অর্থনীতি ও শিক্ষা সংস্কৃতি গড়ে তোলার গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত করে।

জাতীয়বাদ বাঙালি জাতির অনুভূতিমূলক একটি মানসিক ধারণা। আমাদের প্রাচীন সমাজব্যবস্থা, সংস্কৃতি, ভাষা, চিন্তা-চেতনা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পেতে হলে আমাদের বাঙালি জাতির প্রাচীন জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে গবেষণা করতে হবে। 

বাঙালি জাতীয়তাবাদ হল এমন একটি রাজনৈতিক অভিমত যার দ্বারা আমাদের পূর্ব-পুরুষদের জীবন ব্যবস্থা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, বুদ্ধিমত্তা ও ভাষাগত বসবাসরত অধিবাসীদের বোঝানো হয়েছে। 

বাঙালী জাতীয়তাবাদের জনক বলার কারন 

প্রথম বাঙালি জাতীয়তাবাদের জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে রাজা রামমোহন রায়কে। কারণ রাজা রামমোহনের হাত ধরে বাঙালি জাতি তৎকালীন চিন্তা-ভাবনা, সংস্কৃতি এবং প্রচলিত রীতি নীতির বিরুদ্ধে যে আন্দোলন ঘটেছিল তার পরিপ্রেক্ষিতেই বাঙালি জাতির পরিবর্তন ঘটে। নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য কারণ তুলে ধরা হলো। 

১. রাজা রামমোহন রায় তার অসাধারন লেখনি দক্ষতার মাধ্যমে তৎকালীন শিক্ষিত সমাজকে প্রচলিত অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিলেন।

২. তৎকালীন সমাজের রাজনৈতিক ও সামাজিক গতিধারা পর্যবেক্ষণ। 

৩. তৎকালীন প্রচলিত সমাজের বিভিন্ন অপসংস্কৃতি ও প্রথা, যেমন, সতীদাহ প্রথা, বাল্যবিবাহ, মূর্তিপূজা ও অন্যান্য কুসংস্কার দূর করে একেশ্বরবাদের ভিত্তিতে ধর্ম পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। 

৪. বাংলা শিক্ষার পাশাপাশি ইংরেজি শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব প্রদান। 

৫. ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কার, শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বাঙালি সমাজকে আধুনিক আধুনিকতার পথে এগিয়ে নিয়ে যান। 

বাঙালি জাতীয়তাবাদ

প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ তার প্রচলিত ধর্ম, নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতির অনুশীলন ও নিজস্ব ঐতিহ্য স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং সংরক্ষণের লক্ষ্যে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে তোলে। অন্যান্য জাতীয়তাবাদের মতে বাঙালি জাতীয়তাবাদ একটি দীর্ঘলালিত মানসিক ধারণা যা একটি সমাজ বা জাতির মানুষকে বিশেষ সময়ে একত্রিত করে কাজ করতে প্রেরণা যোগায়। 

আমাদের নিজস্ব জাতীয়তাবাদের চেতনা গুলো হলো আধার লোকজ আধার ও প্রকৃতি থেকে নির্বাচিত জ্ঞান ও নির্যাতিত আত্মসম্মানবোধ অর্জন করে তা কখনো বিকশিত করার মধ্য দিয়ে প্রকৃতি চেতনা অর্জন এবং তাদের মধ্যে গড়ে ওঠা চেতনাবোধই জাতীয়তাবাদ।

আরো দেখুন>>>

যার বহিঃপ্রকাশ অভিব্যক্তির মধ্য দিয়ে সমাজে প্রচলিত শিক্ষা, জ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি সক্রিয়তা বিদ্যমান থাকে। এমন চর্চার প্রগতিশীলতা কল্যাণমুখী জাতীয়তাবাদের ভিত্তি রচনা করে ও সমাজকে পরিবর্তন করে। 

Leave a Comment