আসরের নামাজ কয় রাকাত?

আসরের নামাজ কত রাকাত এবং কিভাবে আদায় করতে হয় সে সম্পর্কে জানতে চাইলে আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আজ আমরা আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চলেছি যে, আসরের নামাজের ফজিলত কি, আসরের নামাজ কিভাবে আদায় করতে হয় এবং আসরের নামাজ কত রাকাত ও কি কি।

ইসলাম পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ করেছেন। এছাড়াও ইসলামের ভিত্তি পাঁচটির মধ্যে নামায হল সর্বোত্তম এবং এক নম্বর। মহান রব্বুল আলামিন এবং তার নবী-রাসূলগণ নামাজ সম্পর্কে যুগে যুগে বলে এসেছেন। 

মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআন মাজিদে নামাজ সম্পর্কে বহুবার উল্লেখ করেছেন। নামাজ কে বলা হয় বেহেশতের চাবিকাঠি। যদি কোন ব্যক্তি নামায কায়েম না করে তাহলে তাকে জাহান্নামে যেতে হবে। 

আসরের নামাজের সময় কখন?

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন মহান রব্বুল আলামিন। আসরের নামাজের জন্য সময় হল, জোহরের নামাজের সময় শেষ হওয়ার পর পরেই আসরের নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায় এবং সূর্য অস্ত যাওয়ার আগ পর্যন্ত আসরের নামাজের ওয়াক্ত রয়ে যায়। তবে নির্দিষ্ট সময়ে আসরের নামাজ আদায় করা উত্তম।

আসরের নামাজ কয় রাকাত?

উত্তরঃ আসরের নামাজ হলো ৮ রাকাত। সুন্নত চার রাকাত এবং ফরজ চার রাকাত।

আসরের আজান হওয়ার ২০ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যে নামাজ আদায় করা সর্বোত্তম। এছাড়াও জামায়াতের সঙ্গে নামাজ আদায় করলে অনেক বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। যদি কোন ব্যক্তি সমস্যা জনিত কারণে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে না পারে। তাহলে অন্য সময়ে একাই তা আদায় করে নিতে পারবে।

আসরের নামাজ কত রাকাত?

আসরের নামাজ হলো ৮ রাকাত। সুন্নত চার রাকাত এবং ফরজ চার রাকাত।

নামাজ পড়ার নিয়মঃ

প্রথমে চার রাকাত সুন্নত নামাজ সূরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সূরা মিলিয়ে আদায় করে নিতে হয়। ফরজ চার রাকাত নামাজ ইমাম সাহেবের পিছনে আদায় করে নিতে হয়। যদি কেউ একা আদায় করে তাহলে প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে এবং বৈঠক থেকে ওঠার পর পরের দুই রাকাত নামাজে শুধু সূরা ফাতিহা দিয়ে পড়ে নিতে হয়।

আসরের নামাজ পড়ার নিয়ম

আসরের নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে প্রথমে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে নামাজের জন্য নিয়ত করতে হয়। কেউ যদি আরবিতে নিয়ত করতে না জানলে বাংলায় নিয়ত করতে পারবেন। আপনারা বাংলায় যেভাবে আসরের নামাজের জন্য নিয়ত করবেন।

  • আমি আসরের নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে কেবলামুখী হয়ে চার রাকাত ফরজ বা সুন্নত(ফরজের সময় ফরজ নামাজ বলতে হবে এবং অন্যদের সময়ে সুন্নত বলতে হবে) নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে দাড়াইলাম, আল্লাহু আকবার। 
  • নামাজের জন্য নিয়ত করা হয়ে গেলে সানা পড়তে হবে।
  • এরপর সুরা ফাতিহা এবং অন্য সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে।
  • ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে এবং বাকি দু’রাকাত শুধু সূরা ফাতিহা দিয়ে পড়তে হবে।
  • সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা পড়া শেষ হলে রুকুতে যেতে হবে এবং পাঠ করতে হবে সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম।
  • রুকু থেকে উঠে পাঠ করতে হবে রব্বানা লাকাল হামদ হামদান কাসিরান তাইয়িবান ফিহা।
  • এরপর আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যেতে হবে এবং সিজদায় গিয়ে পাঠ করতে হবে সুবহানা রাব্বিল আলা।
  • প্রথম বৈঠকের সময় শুধু তাশাহুদ পাঠ করতে হবে।
  • তৃতীয় ও চতুর্থ নামাজ এক এই প্রক্রিয়ায় পড়ে নিতে হবে।
  • দ্বিতীয় বৈঠকের সময় তাশাহুদ দরুদে ইব্রাহিম ও দোয়া মাসুরা পড়ার মাধ্যমে নামাজে সালাম ফিরিয়ে সম্পন্ন করতে হবে।

আসরের নামাজের ফজিলত

অন্যান্য সকল নামাজের মত আসরের নামাজের ফজিলত রয়েছে। প্রিয় রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার সাহাবীগণ বিভিন্ন হাদিসে সে সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন।

আরোও দেখুন>>

সাহাবী হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, ফিরেশতারা পালাবদল করে তোমাদের মাঝে এসে থাকেন। একদল দিনে এবং একদল রাতে আসর ও ফজরের সালাতের উভয় দল একত্রে হয়। অতঃপর তোমাদের রাত যাপনকারী দলটি উঠে যায়।

তখন আল্লাহ তালা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন আমার বান্দাদের কোন অবস্থা অবস্থা দেখে এলে। অতঃপর মহান রব্বুল আলামিন এই বিষয় গুলো সম্পর্কে নিজে সবচেয়ে বেশি জানেন। ফেরেশতাগণ বলেন- আমরা আপনার বান্দাদের সালাত রেখে এসেছি। আর আমরা যখন গিয়েছিলাম তখন তারা সালাত আদায় রত অবস্থায় ছিল। (বুখারি, হাদিস- ৫৫৫)

 অন্য একটি হাদিস বর্ণনা করলে পাওয়া যায় যে, আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন। আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ যদি সূর্যাস্তের আগে আসরের নামাজ এক সিজদা পায় তাহলে সে যেন সালাত পূর্ণ করে নেয়। আর যদি সূর্যোদয়ের আগে ফজরের সালাতের এক সিজদা পায় তাহলে সেজন্য সালাত পূর্ণ করে নেয়।( বুখারি, হাদিস-৫৫৬)

হাদিস দুটি থেকে বোঝা গেল যে আসরের নামাজ ফজিলত সর্বাধিক রয়েছে এবং কোন মুহূর্তে তা বাদ দেওয়া যাবে না। 

আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে বন্ধু-বান্ধব সহ সামাজিক মাধ্যম গুলোতে শেয়ার করে অন্যদের দেখার সুযোগ করে দিতে পারেন। এছাড়াও আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনাদের কোন মতামত থাকলে তা কমেন্ট করার মাধ্যমে আমাদেরকে জানিয়ে দিতে পারেন।

 নিত্য নতুন ইসলাম বিষয়ক ও নামায সম্পর্কে আর্টিকেল জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি বুকমার্ক করে রাখতে পারেন।

আসরের নামাজ নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তরঃ

আসরের নামাজ কয় রাকাত?

আসরের নামাজ হলো ৮ রাকাত। সুন্নত চার রাকাত এবং ফরজ চার রাকাত।

মাগরিবের নামাজের সময়?

সূর্য যখন অস্ত যায় তখন মাগরিবের নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায়।

Leave a Comment