দৈনন্দিন জীবনে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাথে আমরা এমন ভাবে সম্পৃক্ত হয়েছি যে সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমানোর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত আমাদেরকে সামাজিক নেটওয়ার্ক প্রবাহিত হতে থাকে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক দৈনন্দিন জীবনে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব সম্পর্কে। 

আজ থেকে ৫০ বছর আগের মতো আমরা ঘুম থেকে উঠে এখন আর চায়ের সঙ্গে পত্রিকা খুঁজি না, আমাদের হাতে থাকায় স্মার্টফোনের মাধ্যমে দেশ সহ সারা বিশ্বের সব ধরনের খবর খুব সহজেই পেতে পারি। আমাদের কোন বন্ধুর সাথে যোগাযোগের প্রয়োজন হলে স্মার্টফোনের মাধ্যমে খুব সহজেই কথা বলা এবং বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করতে পারে। আর এভাবেই প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো আমাদেরকে সম্পৃক্ত করে ফেলেছে। 

সোশ্যাল মিডিয়া কি 

সোশ্যাল মিডিয়া একটি ইংরেজী শব্দ যার বাংলা অর্থ হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সাধারণত ভার্চুয়াল পৃথিবীতে যেসব ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে পরস্পরের সাথে খুব সহজেই ইন্টারনেট ব্যবহার করার মাধ্যমে যোগাযোগ, কনটেন্ট, তথ্য ইত্যাদি শেয়ার করতে পারি তাকে সোশ্যাল মিডিয়া বলা হয়। বর্তমান সময়ে আমাদের কাছে সবচেয়ে যোগাযোগের সহজ ও দ্রুত মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর জনপ্রিয়তা ও চাহিদা অনুযায়ী সোশ্যাল মিডিয়াকে সাধারণত কয়েকটি  ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় সকল কার্যাবলী খুব সহজেই করতে পারি এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে আমরা মোটা অংকের টাকা উপার্জন করে প্রতিষ্ঠিত হতে পারি। 

দৈনন্দিন জীবনে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব

আদিমকালে মানুষ বন বাগানে ঘুরে বেড়াতো একাকী খাবারের সন্ধান করতে এবং টিকে থাকার জন্য একাকী যুদ্ধ করত। এরপর একটা সময় মানুষ টিকে থাকার প্রয়োজনে জীবন ধারার সিস্টেম পরিবর্তন করে অনেক মানুষের সঙ্গে থাকা শুরু করল এবং তৈরি হলো সমাজ।

সেই প্রাচীন সমাজ ধীরে ধীরে পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যাত্রা শুরু বর্তমান আধুনিক সমাজ। আধুনিক ও উত্তর আধুনিক সমাজ পারস্পরিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আমাদের সমাজ প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছে।

 নিচে দৈনন্দিন জীবনে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব তুলে ধরা হল। 

  • শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রভাবঃ আধুনিক যোগাযোগের দুনিয়াতে এখন আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার প্রয়োজনীয়  সকল সামগ্রী এবং বিষয়বস্তু অনলাইনে পেয়ে থাকি। তাই শিক্ষকদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা শিক্ষার্থীরা ভুলেই গেছে।  
  • শারিরিক প্রভাবঃ একটা সময় ছিল যখন আমাদের সমাজের বেশির ভাগ শিশুরা তরুণ-তরুণীরা এবং বৃদ্ধ বয়স্করা মাঠে বা কোন একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসে গল্প করত। কিন্তু এই সোশাল মিডিয়ার কারণে এখন সবাই ঘরে বসে থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে দৈনন্দিন কথাবাত্রা শেয়ার করে। 
  • মানসিক প্রভাবঃ পৃথিবীটা নাকি ছোট তাই সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি মানুষের দৈনন্দিন ঝুঁকি এতটাই বেড়েছে যে একটি বাক্সে যে ভার্চুয়াল পৃথিবীতে বাস্তব পৃথিবীতে সবাই ভুলে গেছে। দিনদিন পৃথিবী থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আজ কাল চাঁদ দেখতে কেমন সেটিতিতারা স্মার্টফোনের মাধ্যমে জেনে নিচ্ছে। 
  • নৈতিক প্রভাবঃ অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত হওয়ার কারণে আমরা আমাদের পরিবারের লোকজনের সাথে ঠিকমত কথা বলার সুযোগ পায় না। 
  • সৃজনশীলতার প্রভাবঃ বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘন্টার পর ঘন্টা সস্তা বিনোদন খুঁজে বেড়ায়। লাইক শেয়ার কমেন্ট সেকশনে নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রাখে এসব কাজে ব্যস্ত থাকতে থাকতে ধীরে ধীরে সৃজনশীল দক্ষতা কমে যাচ্ছে আমাদের মাঝে। 

সঠিকভাবে সোশ্যাল মিডিয়া গুলো ব্যবহার করা হলে সোশ্যাল মিডিয়ার উপকারিতা অনেক রয়েছে। সমাজের সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অন্যায়ের প্রতিবাদ করার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করতে পারি। 

আরো দেখুন>>>

আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে কেমন লেগেছে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন। আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভাল লেগে থাকলে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শেয়ার করে অন্যকে তথ্যগুলো সংগ্রহ করার সুযোগ করে দিবেন, ধন্যবাদ।  

Leave a Comment