জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কি কি লাগে?

জন্ম নিবন্ধন সনদে অনেকের এই অনেক রকম সমস্যা দেখা দেয় যার ফলে ব্যক্তিগত জীবনে অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। অনেকে জানেন না যে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কি কি লাগে। তাই গুগলে সার্চ করে থাকেন কিন্তু ভাল কোন তথ্য না পাওয়ার জন্য কনফিউশনে পড়ে যান।

তাদের কথা ভেবে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কি কি লাগে সে সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে এই আর্টিকেল টির মাধ্যমে আলোচনা করবো। কিভাবে আপনাদের জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে পারবেন এবং কোথায় গিয়ে তা করতে পারবেন।

প্রথমত একটি নাগরিকের নাগরিকত্ব প্রকাশ পায় তার জন্ম নিবন্ধন সনদ টি দ্বারা তাতে যদি অনেক তথ্য ভুল রয়ে যায় সেই ব্যক্তি কে সকল ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই জন্ম নিবন্ধন সনদ টি অতি দ্রত সংশোধন করা জরুরী।

আপনারা কিভাবে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করবেন তা আমরা এই আর্টিকেল দ্বারা তুলে ধরব তাই আর্টিকেল টি শেষ পযর্ন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর্টিকেল টি পড়ার মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার সকল তথ্য জানতে পারবেন।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কি কি লাগে?

আপনাদের এই আর্টিকেল মাধ্যমে জানাবো কিভাবে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কি কি লাগে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কি কি কাগজ পত্র প্রয়োজন হয় জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে। তবে আপনাদের জানিয়ে রাখি যে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার জন্য বিভিন্ন রকম কাগজ প্রয়োজন পড়ে থাকে

প্রথমত জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে জাতীয় পরিচয় পত্র,যদি তার শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকে তাহলে তার সনদ পত্র,জন্ম নিবন্ধন সংশোধন কারির পিতা-মাতার নাম, তার যদি পাসপোর্ট থাকে তার ফটোকপি। এছাড়াও পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র এর ফটোকপি, যদি কারো টিকা কার্ড থাকে তার ফটোকপি প্রয়োজন হবে।

আরও কিছু তথ্য প্রয়োজন রয়েছে যেমন বর্তমান ঠিকানা,চেয়ারম্যানের প্রতায়ন পত্র বা কাউঞ্চিলারের প্রতায়ন পত্র,বাড়ি বা বাসার বাৎসরিক কর আদায়ের রশিদ প্রদান করতে হবে এবং বিদ্যুৎ বিল এর কপি প্রদান করতে হবে।

এছাড়াও আপনাদের জানাবো জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার নিয়ম এবং কিভাবে আবেদন করতে হয়। তাহলে চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার নিয়ম

অনলাইনের মাধ্যমে কিভাবে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করবেন তা আমরা নিচে ধাপে ধাপে আলোচনা করবো। তাহলে চলুন জানা যাক কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার নিয়ম গুলোঃ

ধাপ-০১ঃ জন্ম নিবন্ধন ওয়েব সাইট ভিজিট 

সবার প্রথমে  আপনাদের জন্ম নিবন্ধন এর ওয়েব সাইট টিতে ভিজিট করতে হবে। জন্ম নিবন্ধন এর ওয়েব সাইট হল bdris.gov.bd এই সাইট ঢুকে নিছে একটি মেনু চলে আসবে সেখান থেকে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন মেনুতে ক্লিক করতে হবে।

ধাপ-০২ঃ নিবন্ধন নাম্বার ও জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধনের তথ্য বের করুণ

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন মেনুতে ক্লিক করে ১৭ ডিজিটের নিবন্ধন নাম্বারটি প্রদান করতে হবে। এরপর সাবমিট বাটনে ক্লিক করে তথ্যটি যাচাই করুণ। যদি আপনার নিবন্ধন নাম্বার টি ১৭ ডিজিটের না হয়ে থাকে তাহলে আপনার ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশন সেখানে যোগাযোগ করে তা সংগ্রহ করে নিন।

এছাড়াও আপনারা নিজেও ১৬ ডিজিটের নিবন্ধন নাম্বার টি ১৭ ডিজিটের করতে পারবেন। ১৬ ডিজিটের নিবন্ধন নাম্বার টির শেষ ০৫ ডিজিটের আগে শুন্য বসিয়ে দিন তাহলে আপনার নিবন্ধন নাম্বার টি অনলাইন ১৭ ডিজিটের হয়ে যাবে।

ধাপ-০৩ঃ  নিবন্ধন কার্যলয় বাছাই করুণ

এই ধাপে আপনাকে আপনার নিবন্ধন কার্যলয় বাছাই করতে হবে। যেমন আপনার জেলা,উপজেলা,বিভাগ ও দেশ সেলেক্ট করতে হবে এবং আপনি যে ইউনিয়ন বা পৌরসভা সেলেক্ট করতে হবে।

ধাপ-০৪ঃ সংশোধনের তথ্য যাচাই করুণ

আপনি যে তথ্য গুলো সংশোধন করতে চান সেগুলো ফরম টিতে সংযুক্ত করুণ। আপনার যে তথ্য গুলো ভুল রয়েছে তা চিহ্নিত করুণ এবং তা নির্ভুল ভাবে পূরণ করুণ।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার নিয়ম

ধাপ-০৫ঃ সংশোধিত তথ্য ও সংশোধনের কারণ দিন

যদি আপনার জন্ম তারিখে সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে জন্ম তারিখ সেলেক্ট করে সেখান থেকে ক্যালেন্ডার মধ্যে থাকা তারিখ অর্থাৎ আপনার সঠিক তারিখ ও মাসএবং বছর সেলেক্ট করতে হবে। সেলেক্ট করা হয়ে গেলে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।

ধাপ-০৬ঃ ঠিকানা লেখুন

আপনার যদি ঠিকানা ভুল থেকে থাকে তাহলে তা সেলেক্ট করে আপনার ঠিকানা যেমন জন্ম স্থান,বর্তমান ঠিকানা,স্থায়ী ঠিকানা ও ইউনিয়ন,উপজেলা এবং জেলা সেরেলেক্ট করুণ। সব কিছু সঠিক ভাবে পূরণ করে তা সাবমিট করুণ।

ধাপ-০৭ঃ অনলাইনে আবেদন জমা ও প্রমানপত্র উপলোড 

সব কিছু সঠিক ভাবে পূরন করা হলে, যে ব্যক্তি আবেদন পূরণ করেছেন তার কন্টাক্ট নাম্বার টি প্রদান করতে হবে। যদি আপনি তা নিজে করে থাকেন তাহলে নিজ সিলেক্ট করতে হবে। যদি সন্তানের জন্ম সনদ হয়ে থাকে তাহলে পিতা-মাতা সিলেক্ট করুণ।

আরো দেখুন>>>

যদি অন্য কিছু হয় তাহলে তা সিলেক্ট করুণ। সিলেক্ট করা হলে সবুজ বাটনে ক্লিক করে তা সংযজন করুণ। এছাড়াও প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো উপলোড করুণ। চাইলে আপনি আপনার মোবাইল তুলা ছবি দিতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনার মোবাইল তোলা ছবি কোন রকম ছোট বা বড় হওয়া যাবে না এবং তা একদিক বড় অন্য দিক ছোট হওয়া যাবে না। এছাড়াও ছবিটি অন্ধকার হওয়া যাবে না তাহলে আপনি ওই ছবিটি দিতে পারবেন।

ধাপ-০৮ঃ জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন পত্র প্রিন্ট

পরিশেষে সব কিছু সম্পূর্ণ করা হলে আবেদনটি সাবমিট করতে হবে। সাবমিট করার পর আবেদন পত্রটি প্রিন্ট করে নিতে হবে ডুকুমেন্ট হিসেবে। সংশ্লিষ্ট আবেদন পত্রটি উপজেলা,পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন জমা প্রদান করতে হবে।

এছাড়াও আপনার প্রিন্ট না থাকলে আপনি অ্যাপ্লিকেশান আইডি কার্ড টি ব্যবহার করে আপনি আপনার জন্য একটি কপি প্রিন্ট করে বের করে নিতে পারেন।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশ সরকার নিতিমালা অনুসারে জন্ম নিবন্ধন বা জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন করার জন্য একটি পুনঃমুদ্রণ ফ্রি নির্ধারণ করা হয়েছে। জন্ম নিবন্ধন করতে মোট ২০০ থেকে ৩০০ টাকা লাগতে পারে। সরকারী ভাবে জন্ম নিবন্ধন জন্য ফ্রি নির্ধারন করা হয়েছে ৫০ টাকা এবং জন্ম নিবন্ধন সংশোধন জন্য ফ্রি নির্ধারন করা হয়েছে ১০০ টাকা।

এছাড়াও আপনাদের কে কিছু বাড়তি খরচ গুন্তে হবে। যেমন আপনার কাগজ পত্রের ফটোকপি প্রয়োজন হবে। সংশোধন কারির পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন জন্ম সনদের ফটোকপি প্রয়োজন হবে।

জন্ম নিবন্ধন পিতা/মাতার নাম সংশোধন

জন্ম নিবন্ধনে যদি কারো পিতা-মাতার নামের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে তাকে তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ পত্র ফটোকপি দিয়ে সংশোধন করতে হবে । এছাড়া পিতা-মাতার জন্ম সনদ বা জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে ঠিক করতে হবে।

আমাদের আর্টিকেল টি পড়ার মাধ্যমে আপনারা অনেক উপকৃত হয়েছেন। আমাদের পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে সামাজিক মাধ্যম গুলোতে শেয়ার করে অন্যদের দেখার সুজুগ করে দিতে পারেন। এছাড়াও কোন জানার থাকলে কমেন্ট করার মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারেন। আপনাদের কমেন্টের যথাযথ উত্তর প্রদান করবো।

Leave a Comment