কোন দেশ ভাষার জন্য যুদ্ধ করেছে

যে ভাষা আমরা মায়ের মুখে প্রথম শুনি, তারপর সেই ভাষায় নিজে কথা বলি তাকে মাতৃভাষা বলে। আমাদের এই মাতৃভাষা কোনো জাতি কেড়ে নিতে চাইলে আমরা অবশ্যই নিজের জীবন দিয়ে হলেও মাতৃভাষা রক্ষা করব। পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ রয়েছে যারা মাতৃভাষা রক্ষার জন্য আন্দোলন করেছে।

কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ বা বাঙ্গালি জাতি নিজের মাতৃভাষা রক্ষার জন্য পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে জীবন দিয়ে যুদ্ধ করেছেন। চলুন তাহলে মাতৃভাষা রক্ষার জন্য কোন দেশ আন্দোলন ও যুদ্ধ করেছে সেই  সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করা যাক। 

ভাষার জন্য আন্দোলন 

পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকেই নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য মানুষ যুদ্ধ করে যাচ্ছে। প্রতিটি মুহূর্তে পানির জন্য, খাদ্যের জন্য, বাসস্থানের জন্য, দেশের জন্য লড়াই করতে হয়। পৃথিবীতে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কত কিছুর জন্য যে লড়াই করতে হয় সে শুধু লড়াকুরাই জানে। 

বাংলাদেশ সহ অনেক দেশ মাতৃভাষা রক্ষা ও প্রতিষ্ঠিত করার জন্যও জীবন বাজী রেখে আন্দোলন করেছে। যেমন, ভারত, কানাডা, লাটভিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ আফ্রিকার পৃথিবীর অনেক দেশেই মাতৃভাষা রক্ষার জন্য বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম করেছে এবং তারা সফলও হয়েছে নিজের মাতৃভাষা রক্ষায়। আমরা কখনোই চাইবোনা আমাদের মায়ের মুখের ভাষা অন্য কেউ কেড়ে নেয়া প্রয়োজন হলে জীবন দিয়ে হলেও নিজের মাতৃভাষা রক্ষা করব। 

ভাষার জন্য যুদ্ধ

আমরা পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ পাব যে দেশগুলো নিজের মাতৃভাষা রক্ষার জন্য অনেকদিন যাবত আন্দোলন, সংগ্রাম করে নিজের মাতৃভাষা রক্ষা ও প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু একমাত্র বাঙালি এমন একটি জাতি যারা নিজের মাতৃভাষা রক্ষা ও প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। লক্ষ লক্ষ মানুষ একত্রিত হয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।

বাঙ্গালি জাতি ১৯৫২ সালে ২১ শে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষাকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে তরুণ-তরুণী, কৃষক, বিচারক ও সাধারন মানুষ তাদের জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষার জন্য।

আরো দেখুন>>>

এ ভাষা আন্দোলনের যুদ্ধের রফিক, শফিক, বরকত, রহমত, শরীফ, জব্বার সর্বপ্রথম নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন। তাছাড়া এমন অসংখ্য সাধারণ মানুষ রয়েছে যাদের জীবন বিসর্জনের কথা ইতিহাসের পাতায় উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি।

তাইতো ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ তথা সমস্ত বাংলা ভাষী জনগণের গৌরবোজ্জ্বল একটি স্মরণীয় দিন। এই দিনটিকে বাঙালি জাতি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। 

আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভাল লেগে থাকলে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শেয়ার করে। অন্যকে বাংলা ভাষা রক্ষায় একুশে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস রচিত কাহিনীর সঠিক তথ্য সংগ্রহ সুযোগ করে দিন।

Leave a Comment