মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ

যেকোনো রাষ্ট্রের যানজট কমাতে মেট্রোরেল ভূমিকা অপরিসীম। যে সকল রাষ্ট্রে বা দেশে জনসংখ্যা বেশি হওয়ার ফলে যানজট লেগেই থাকে সে সকল দেশের যানজট কমানোর  জন্য মেট্রোরেল খুব গুরুত্বপূর্ণ। আজ আমরা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করবো মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ সম্পর্কে।

মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ

বাংলাদেশ একটি ঘনবসতি সম্পন্ন দেশ এদেশের ঢাকা শহরে জনসংখ্যা বহুল পরিমাণে থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। আর ঢাকা শহরের যানজট কমানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার একটি প্রকল্প হাতে নেন।  প্রকল্পটি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড এর অধীনে শুরু করা হয়। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে প্রায় দেড় কোটি জনসংখ্যার বিপুল সংখ্যক যাত্রী যানবাহনের কারণে অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়।

মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ

 যানজট নিরসনের জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলেও যানজট নিরসন করা সম্ভব হয় না। ২০১৩ সালে ঢাকা নগরীর ক্রমবর্ধমান যানবাহন সমস্যা ও পথের যানজট কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। যার ফলে এ প্রকল্পটি চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মেট্রোরেল টি মূলত বৈদ্যুতিক যান যা অল্প সময়ের মধ্যেই যাত্রীদের নির্দিষ্ট গন্তব্য স্থলে পৌঁছে যেতে সক্ষম হবে।  যার ফলে রাজধানী ঢাকা শহরের যানজট নিরসন করা সম্ভব।

মেট্রোরেল ব্যবস্থাটি রাজধানী ঢাকার উত্তরাঞ্চলের উত্তরাকে শহরের দক্ষিণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র মতিঝিলে সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। ২০১৬ সালে প্রণীত পরিকল্পনা সংশোধিত কৌশলগত অনুসারে নির্মিত মেট্রোরেলের লাইনের সংখ্যা তিন(৩)টি থেকে তা বাড়িয়ে পাঁচ(৫)টি করা হয়। এছাড়া মেট্রোরেলের প্রথম এম আর লাইন সিক্স(৬) এর নির্মাণাধীন এর কাজ শুরু করা হয় উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ হিসেবে।

এমআরটি লাইন সিক্স(৬) এর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয় ২০১৬ সালের ২৬শে জুন। মেট্রোরেল নির্মাণাধীন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে  নির্মাণাধীন কাজ শুরু করা হয়। ঢাকা মেট্রো রেল পথে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং উচু করা হবে। 

মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ রচনা

ঢাকা মেট্রো রেল হল একটি দ্রুতগামী পরিবহন ব্যবস্থা যার মাধ্যমে ঢাকা শহরের যানজট নিরসন করা সম্ভব হবে। এই মেট্রোরেল টিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড কে দেওয়া হয়। মেট্রোরেল প্রথম নির্মাণাধীন কাজ শুরু করা হয় ঢাকার উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.০৬কিলোমিটার। প্রকল্পটি প্রথম দিকে তিন লাইনের করার কথা হলো তা সংশোধিত করে তা বাড়িয়ে ৫ লাইন করা হয়। 

আরোও দেখুন>

নির্মাণাধীন কাজ শুরু করা হয় ২০১৬ সালের ২৬শে জুন থেকে। মেট্রোরেলের নির্মাণাধীন কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নিয়েছে জায়গা ও ডিএমটিসিএল ২০৩০ সাল নাগাদ। ২০৩০ সালের মধ্যে ১২৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মোট ০৬ টি মেট্রো লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। মেট্রো রেল নেটওয়ার্কে ৫১টি উড়াল স্টেশন এবং ৫৩ টি ভূ-গর্ভস্থ স্টেশন থাকবে এই ০৬ টি লাইনে মিলিতভাবে দিনে ৪৭ লাখ যাত্রী পরিবহন করা যাবে। 

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২২ সালে২৮ শে ডিসেম্বর এমআরটি লাইন সিক্সের(৬) দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও অংশ উদ্বোধনের মাধ্যমে ঢাকা মেট্রোরেল এর আংশিক আনুষ্ঠানিক যাত্রা কাজ শুরু করান। এরপর ঢাকা মেট্রোরেল জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়২৯ শে ডিসেম্বর ২০২২ সালের শুরুতে। শুধু উত্তরা দিয়াবাড়ি এবং আগারগাঁও দুরন্ত এই দুইটি স্টেশনে ট্রেনটি থামত। এরপর থেকে ২৫শে জানুয়ারি ২০২৩ সালে পল্লবী স্টেশন খুলে দেওয়া হয়। 

ঢাকা মেট্রো লাইন এই রুট টিতে ১৬ টি স্টেশন থাকবে। এছাড়া উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ০৯ টি স্টেশন থাকবে। ঢাকা মেট্রোরেলের প্রতিটি ট্রেনে বগি থাকবে ০৬ টি করে। প্রত্যেক টি বগি শীতল ও প্রসস্থ থাকবে। এছাড়াও যাত্রীদের জন্য আরামদায়ক আসুন ও নারীদের জন্য বিশেষায়িত বগি থাকবে। প্রতিটি ট্রেনে যাত্রী সিট এ ধারণ ক্ষমতা থাকবে ৯৪২ জন এছাড়াও দাঁড়িয়ে যাত্রী দিতে পারবে ৫৭৪ জন। 

মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ রচনা

ঢাকা মেট্রো রেল ৩২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় নেয় ৩৪ মিনিট। ঢাকা মেট্রো রেলের যাত্রীদের সংক্রিয় কার্ডের মাধ্যমে মেশিনে ভাড়া পরিশোধ করতে হবে। সর্বোচ্চ ভাড়া নির্ধারিত করা হয়েছে ১০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারিত করা হয়েছে ২০ টাকা। মেট্রোরেল টি নিয়ন্ত্রিত করা হয় সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক পদ্ধতিতে। বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্য পাঁচটি উপকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। উপকেন্দ্র গুলো হল- উত্তরা, পল্লবী, সোনারগাঁও, তালতলা ও বাংলা একাডেমি। 

এই পাঁচটি উপকেন্দ্র থেকে প্রতি ঘন্টায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় প্রায় ১৩.৪৭ মেগাওয়াট। ঢাকা মেট্রো রেলওয়ে ৭৫% কাজ ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড সম্পূর্ণ করেছেন এবং বাকি ২৫% কাজ করেছেন বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব খাত থেকে। এই প্রকল্পটিতে মোট ব্যয়ের পরিমাণ ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাক্ষ টাকা। এর মধ্যে জাইকা এ প্রকল্পে সহায়তা করবেন ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি 48 লাখ টাকা। বাকি অর্থ গুলো বহন করবে বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব খাত থেকে। 

কর্তৃপক্ষের মতে প্রকল্পটি পরিকল্পনা অনুযায়ী চালু হলে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো রেল দুদিক থেকে প্রতি ঘন্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে। এতে করে রাজধানী ঢাকা শহরের যানজট নিরসন করা সম্ভব হবে। এমআরটি-০৬ এর চূড়ান্ত রুট উত্তরা তৃতীয় ধাপ পল্লবী সারণির পশ্চিম পাশ দিয়ে খামারবাড়ি, ফার্মগেট, সোনারগাঁও হোটেল, শাহবাগ চত্বর খানা রোড থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ১৬ টি স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। শহরের ভেতর যানজট নিরসনের জন্য কর্তৃপক্ষ এ প্রকল্পটি মাধ্যমে যানজট দূর করেন এর ফলে জনগণের সঠিক সময়ে যাতায়াত করার সুবিধা পান। 

আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ রচনা টি সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন। আর্টিকেলটি যদি আপনাদের কাছে ভাল লেগে থাকে তাহলে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুলোতে শেয়ার করার মাধ্যমে অন্যদের দেখার সুযোগ করে দিতে পারেন।

 এছাড়া আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করার মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারেন।  আপনাদের কমেন্ট গুলো আমাদের নিত্য নতুন আর্টিকেল লিখতে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে থাকে। শিক্ষামূলক নিত্য নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন।

Leave a Comment