রাষ্ট্র কাকে বলে? রাষ্ট্রের বিভিন্ন উপাদান

আপনারা কি রাষ্ট্র কাকে বলে সে সম্পর্কে জানার জন্য অনুসন্ধান করতেছেন তাহলে আপনারা সঠিক ওয়েব সাইটে রয়েছেন। এই আর্টিকেল মাধ্যমে আলোচনা করবো রাষ্ট্র কাকে বলে এবং রাষ্ট্রের উপাদান গুলো কি কি রয়েছে। 

সাধারনত ভাবে রাষ্ট্র বলতে এমন একটি রাজনৈতিক সংগঠন কে বোঝায় যেকোনো একটি ভৌগলিক এলাকা বা অঞ্চলের জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করার মতো ক্ষমতা রাখে তাকে রাষ্ট্র বলে। রাষ্ট্র একগুচ্ছ প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গড়ে উঠে। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট ভৌগলিক এলাকার জনগণের উপর শাসনের জন্য নিয়ম কানুন তৈরি করেন এবং তা কার্যকর করেন।

রাষ্ট্রের বিভিন্ন উপাদান রয়েছে সে সকল উপাদান ছাড়া কোন রাষ্ট্র গঠন হতে পারে না। রাষ্ট্রের উপাদান গুলো সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব। আর্টিকেলটি সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। 

রাষ্ট্র কাকে বলে?

সুনির্দিষ্ট ভূখণ্ডে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী জনগন, সুসংগঠিত সরকারের প্রতি স্বভাবজাত ভাবে আনুগত্যশীল এবং বহিঃশত্রুর নিয়ন্ত্রণ হতে মুক্ত জনসমষ্টিকে রাষ্ট্র’ বলে।

রাষ্ট্র সম্পর্কে বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্ন ভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের সংজ্ঞা  সম্পর্কে চলুন জেনে নেই।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বার্জেস এর মতে, একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে রাজনৈতিক দিক থেকে সুসংগঠিত জনসমষ্টির হলো রাষ্ট্র।

স্যার অধ্যাপক গার্নারের মতে, রাষ্ট্র হল সাধারণভাবে বৃহৎ এক জনসমষ্টি যা নির্দিষ্ট ভূখন্ড স্থায়ীভাবে বসবাস করে, যা বহিঃশত্রুর হাত থেকে মুক্ত এবং যার একটি সুসংগঠিত সরকার রয়েছে এবং স্বাভাবিক আনুগত্য প্রদর্শন করে থাকে তাকে রাষ্ট্র বলে।

মার্কিন রাষ্ট্রপতি উইলসন এর মতে, কোন নির্দিষ্ট ভূখন্ড  আইন প্রতিষ্ঠার জন্য সুসংগঠিত জনসমষ্টির হলো রাষ্ট্র।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক  এরিস্টটলের মতে, কতিপয় কত গুলো পরিবার বা জনসমষ্টিকে নিয়ে যেখানে সুসংবদ্ধ ভাবে বসবাস করা হয় তাকে রাষ্ট্র বলে। 

 রাষ্ট্রের বিভিন্ন উপাদান

রাষ্ট্রের চারটি উপাদান রয়েছে। এই উপাদান গুলো ছাড়া কোন রাষ্ট্র গঠন হতে পারে না। একটি অপরটির সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। চলুন তাহলে জেনে নেই রাষ্ট্রের উপাদান গুলো কি কি

১। জনসমষ্টি

২।  নির্দিষ্ট ভূখন্ড 

৩। সরকার 

৪। সার্বভৌমত্ব

জনসমষ্টিঃ রাষ্ট্র হল একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। তাই রাষ্ট্রের অপরিহার্য উপাদান হলো জনসমষ্টি। জনসমষ্টি ছাড়া কোন রাষ্ট্রকে চিন্তা করা যায় না। রাষ্ট্রের ধরন হিসাবে জনসংখ্যা কম বা বেশি হতে পারে।  উদাহরন হিসাবে আমরা বলতে পারি কানাডা,মালদ্বীপ ও সিঙ্গাপুর হল ছোট রাষ্ট্র অপর দিকে চীন,ইন্দোনেশিয়া ও ভারত বড় রাষ্ট্র।

নির্দিষ্ট ভূখন্ডঃ নির্দিষ্ট ভূখন্ড রাষ্ট্রের দ্বিতীয় অপরিহার্য একটি উপাদান। কোন রাষ্ট্রের জনসমষ্টি রয়েছে কিন্তু ভূখণ্ড নেই তাহলে রাষ্ট্র গঠন হবে না। রাষ্ট্র গঠন করতে হলে অবশ্যই নির্দিষ্ট ভূখন্ড থাকতে হবে। স্থানভেদে ভূখন্ড ছোট বড় হতে পারে। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে নেদারল্যান্ড আয়তন মাত্র সাড়ে ১২ হাজার বর্গমাইল অপর দিকে বাংলাদেশের আয়তন ৫৬ হাজার বর্গমাইল।

আরো দেখুন

সরকারঃ যে কোন রাষ্ট্রের অপরিহার্য উপাদান হলো সরকার। সরকার ছাড়া কোনো রাষ্ট্র চলতে পারে না। রাষ্ট্রের যাবতীয় কার্যাবলী সরকারের মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়ে থাকে তাই প্রতিটি রাষ্ট্রের সরকারের অবদান অপরিহার্য। সরকারের দায়িত্ব থাকেন রাষ্ট্রের জন্য আইন,শাসন ও বিচার ব্যবস্থা তৈরি করা এবং তা পরিচালনা করা। তাই প্রতিটি রাষ্ট্রে আইন বিভাগ,শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ রয়েছে। 

সার্বভৌমত্বঃ রাষ্ট্র গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো সার্বভৌমত্ব। সার্বভৌমত্ব কোন রাষ্ট্রের কথা চিন্তা করা যায় না। যদি কোন রাষ্ট্রের মধ্যে ৩ টি উপাদান থাকে জনসমষ্টি,নির্দিষ্ট ভূখন্ড ও সরকার তবে সার্বভৌমত্ব না থাকে তাহলে ওই রাষ্ট্রটি কখনো গঠন হতে পারবে না। সার্বভৌমত্বকে রাষ্ট্রের প্রাণ বলা হয়। তাই রাষ্ট্র গঠন করতে হলে রাষ্ট্রের চারটি উপাদান অবশ্যই থাকতে হবে তাহলে রাষ্ট্র গঠন সম্ভব হবে। 

আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করার মাধ্যমে অন্যদের দেখার সুযোগ করে দিতে পারেন। এছাড়াও শিক্ষামূলক নিত্য নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন।

Leave a Comment