পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম এবং প্রক্রিয়া 

পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম শিরোনামের আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদেরকে দেখিয়ে দেবো, কিভাবে অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করতে হয়, পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য আপনার কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন, কত টাকা পাসপোর্ট ফি প্রদান করতে হয় এবং পাসপোর্ট আবেদন করার পর পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে কি কি করতে হবে। এই সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।  

পাসপোর্ট কি?

ফরাসী শব্দ থেকে পাসপোর্ট শব্দের উৎপত্তি। দেশের সরকারি নিয়ম অনুসারে বৈধভাবে কোন দেশে যেকোনো উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য যে সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয় তাই হল পাসপোর্ট। পাসপোর্ট হল নাগরিকদের জন্য বিদেশ ভ্রমনের একটি অফিসিয়াল দলিল। জন্ম বা অভিবাসন সূত্রে বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের নাগরিকদের দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশের পাসপোর্ট অফিস বা বিদেশে বাংলাদেশী দূতাবাস থেকে পাসপোর্ট দেয়া হয়ে থাকে।

পাসপোর্ট কি?

উত্তরঃ সরকারি নিয়ম অনুসারে বৈধভাবে কোন দেশে যেকোনো উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য যে সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয় তাই হল পাসপোর্ট।

পাসপোর্ট হলো প্রবাস জীবনের বৈধ একটি নাগরিকত্বের পরিচয়। অর্থাৎ আপনি যদি এক দেশ থেকে অন্য দেশে কাজের কিংবা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যেতে চান। তাহলে আপনাকে অবশ্যই আপনার জন্মভূমি  অর্থাৎ নিজ দেশের সরকারি আইন মোতাবেক পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগের মাধ্যমে একটি পাসপোর্ট তৈরি করতে হবে। যে পাসপোর্টটি হবে আপনার প্রবাস জীবনের নিজ দেশের নাগরিকের পরিচয়। 

আপনি আপনার প্রয়োজনীয় ভ্রমণ বা কাজে বিদেশে যাওয়ার জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন পড়বে পাসপোর্ট।  আপনি বৈধভাবে একবার পাসপোর্ট করে নিলে ওই পাসপোর্টের  মেয়াদ অনুযায়ী আপনি যেকোন দেশে বৈধ উপায়ে ভ্রমণ করতে পারবেন। পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে সেগুলো মেনে আপনি পাসপোর্ট আবেদন খুব সহজেই করতে পারবেন। 

পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম

নিজের প্রয়োজনে বিদেশে ভ্রমণ বা কাজের জন্য যাওয়ার জন্য যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাহলে পাসপোর্ট। পাসপোর্ট করার নিয়ম বা প্রক্রিয়া অনেকের কাছে বেশ জটিল মনে হলেও আসলে তেমন কঠিন নয়। আমাদের দেশে পাসপোর্ট করার জন্য কয়েকটি নিয়ম চালু রয়েছে। আপনি চাইলে আপনার নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সরাসরি সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে করে নিয়ে পাসপোর্ট করার জন্য আবেদন করতে পারবেন।  

 পাসপোর্ট করার নিয়ম গুলো নিচে তুলে ধরা হলোঃ 

  1. প্রথমে আপনার নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আবেদন ফরমটি সংগ্রহ করুন। ,
  2. আবেদন ফরম সংগ্রহ করার পর আবেদন ফরমে উল্লেখিত সকল তথ্যাবলী আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম সনদ অনুযায়ী লিপিবদ্ধ করুন। 
  3. আবেদন ফরম টি সঠিকভাবে পূরণ করার পর আবেদন ফরমের সঙ্গে আপনার সত্যায়িত পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি রঙিন ছবি এবং ভোটার আইডি কার্ডের  সত্যায়িত ফটোকপি, নাগরিক সনদপত্র ইত্যাদি সংযুক্ত করে দিবেন। 
  4. এবার আপনার আবেদন ফরম কি সহ আবেদন ফি পাসপোর্ট অফিসে জমা দিন। 
  5.  সঠিকভাবে আবেদন ফর্মটি পূরণ করা হলে পাসপোর্ট অফিস থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য আপনাকে অবশ্যই ফোন করা হবে অথবা পুলিশ আপনার বাসায় এসে সরাসরি সকল তথ্য সংগ্রহ করবে। 
  6. আবেদন ফরম টি পাসপোর্ট অফিসে জমা দেওয়ার পর আপনাকে একটি পাসপোর্ট টোকন দেওয়া হবে যেটা পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর আপনি আপনার পাসপোর্টের সকল তথ্য বা স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন।  
  7. টোকন দিয়ে পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক করার সময় অবশ্যই আপনার পাসপোর্টে সঠিক তথ্য আছে কিনা সে বিষয়ে গুলো মনোযোগ সহকারে খেয়াল করুন। যদি কোন তথ্য ভুল থাকে তাৎক্ষণিকভাবে পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করুন। 
  8. সর্বশেষ পাসপোর্ট অফিস থেকে আপনার কাঙ্ক্ষিত পাসওয়ার্ডটি সংগ্রহ করুন।

উপরে উল্লেখিত নিয়ম ও কাগজপত্র গুলো সঠিক ভাবে সংগ্রহ করে অনলাইনের মাধ্যমে বা সরাসরি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করলে, খুব দ্রুত সময়ে আপনার পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়াটি শুরু হবে। আপনি খুব সহজে ঘরে বসে থেকেই পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন। 

পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগে

আমাদের দেশে বিভিন্ন বড় বড় হোটেল বা রেস্টুরেন্টগুলোতে যেতে হলে, যেমন জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন পত্র প্রদর্শন করতে হয়। তেমনি বিদেশে বৈধভাবেই ভ্রমণ করতে গেলে অবশ্যই বৈধ উপায়ে পাসপোর্ট তৈরি করতে হবে। 

আরোও দেখুন>>>

বিদেশে পাড়ি জমাতে হলে অবশ্যই আপনাকে বৈধ উপায়ে বৈধভাবে যেতে হবে। বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ভ্রমণের ক্ষেত্রে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। যেমন, 

  • জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) সনদ। 
  • ১৮ বছরের নিচে হলে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) সনদ।
  • পেশাগত প্রমাণ (যেমন ছাত্র হলে স্টুডেন্ট আইডি, জব হোল্ডার হলে জব আইডী, ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্স, কৃষক হলে জমির খতিয়ান)।
  • ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ড্রাইভার, উকিল ও অন্যান্য পেশার লোকদের ক্ষেত্রে পেশাগত সনদ।
  • সরকারী চাকুরীজীবীদের জন্য NOC বা Government Order-সরকারি আদেশ (GO/জিও)
  • নাগরিক সনদপত্র।
  • পাসপোর্ট ফরম পূরণকৃত – ২ কপি।
  • সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজ ছবি – ২ কপি।
  • নাগরিক সনদপত্র ইত্যাদি।

উপরে উল্লেখিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো সংগ্রহ করে আপনি অনলাইন বা অফলাইনের মাধ্যমে সরাসরি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে পাসপোর্ট করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম

সম্প্রীতি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে জনগনের সুবিধার্থে এবং ভোগান্তি এড়াতে অনলাইনের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিদেশে ভ্রমণের জন্য আবেদন করা যায়। এই আবেদন প্রক্রিয়া টির নাম হল ই-পাসপোর্ট আবেদন। আমরা ঘরে বসে থেকেই নিজের সকল তথ্য সংগ্রহ করে অনলাইনের মাধ্যমে ই-পাসপোর্টে আবেদন করতে পারবো। 

চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক অনলাইনে ই-পাসপোর্টে আবেদন করার নিয়ম গুলো। যথা, 

১. প্রথমে আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপের যেকোন ব্রাউজার ওপেন করে অনলাইনে ই-পাসপোর্টের আবেদন করতে www.epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে লগ ইন করতে হবে।

২. ওয়েবসাইটের হোম পেজে Directly to online application বাঁটনে ক্লিক করতে হবে।

৩. এবার ই-পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়াটি শুরু হবে আপনাকে সকল ধরনের সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। প্রথম ধাপে আপনি বাংলাদেশের জেলা, শহর ও থানা থেকে আবেদন করতে চাচ্ছেন নির্বাচন করুন। 

৪. ২য় ধাপে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য  ইমেইল অ্যাড্রেস সম্বলিত ই-পাসপোর্টের মূল ফরমটি পূরণ করে সাবমিট করতে হবে। 

৫. এবার আপনার ই-মেইল অ্যাড্রেসের পাসওয়ার্ড, পার্সোনাল কিছু ইনফরমেশন, আপনার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার দিয়ে সিলেক্ট বাটনে ক্লিক করুন।

৬.  এবার পেমেন্ট অপশনে আপনি যে কোনো ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অনলাইনে পেমেন্ট করতে পারবেন। অথবা বাংলাদেশ অনুমোদিত পাঁচ ব্যাংকের যে কোনো একটিতে টাকা জমা দিয়ে সেই জমা স্লিপের নম্বর দিয়ে ফাইল সাবমিট করতে পারবেন। 

৭. পরবর্তী ধাপে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ (এনআইডি) প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস নিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানের জন্য পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে।

৮. এবার আবেদনকারীর ই-পাসপোর্ট আবেদনটি সম্পূর্ণ হল এবং আবেদনকারীর দেওয়ার মোবাইল নাম্বারের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে ই-পাসপোর্ট গ্রহন করার সময় সম্পর্কে। 

ই পাসপোর্ট ফি

বাংলাদেশ পাসপোর্ট ভিসা আইন অনুযায়ী অনলাইনের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণে ফি পরিশোধ করতে হবে। ই পাসপোর্টের ধরনের অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৪০২৫ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৩৮০০ টাকার মধ্যে ই পাসপোট ফি ধার্য করা হয়েছে।

উপরে উল্লেখিত ই-পাসপোর্ট সরকারি ফি ব্যতীত পাসপোর্ট অফিসে অতিরিক্ত আর কোন ফি নেই। তবে নিজে আবেদন করতে না পারলে কম্পিউটার দোকান থেকে বা অন্য কোথাও থেকে আবেদন করিয়ে নিতে ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা দিতে হয়।

ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

বর্তমানে সবক্ষেত্রে ডিজিটাল সুবিধার্থে ঘরে বসে থেকেই অনলাইনের মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট আবেদন করে থাকে। ই পাসপোর্ট আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই আমাদের জেনে রাখা ভালো যে আবেদন করার ক্ষেত্রে কি কি প্রয়োজন পড়ে। যেমন, 

  • জাতীয় পরিচয়পত্র / অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ। 
  • ১৮ বছরের নিচে হলে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) সনদ।
  • পেশাগত প্রমাণ/ পেশাগত সনদ।
  • সরকারী চাকুরীজীবীদের জন্য NOC বা Government Order-সরকারি আদেশ (GO/জিও)
  • নাগরিক সনদপত্র।
  • পাসপোর্ট ফরম পূরণকৃত – ২ কপি।
  • সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজ ছবি – ২ কপি। 
  • নাগরিক সনদপত্র ইত্যাদি। 

পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশে আবেদনকারীদের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৩৫০০ টাকা, জরুরি ফি ৫৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৭৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৫০০০ টাকা, জরুরি ফি ৭০০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৯০০০ টাকা।

এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের ভ্রমণ কর অনুযায়ী আবেদনকারীদের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৫৫০০ টাকা, জরুরি ফি ৭৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১০৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৭০০০ টাকা, জরুরি ফি ৯০০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১২০০০ টাকা। 

পাসপোর্টের কাগজপত্র কোথায় জমা দিতে হয়

অফলাইনে বা অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফরম পূরণ করার পর আবেদন ফরমটি আপনার নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ জমা দিবেন। 

পাসপোর্ট অফিসে আবেদন ফরম জমা দেওয়ার সময় কয়েকটি বিষয় অবশ্যই আপনাকে মনে রাখতে হবে। যেমন, 

  • পাসপোট ফর্ম জমা দেওয়ার পূর্বে আপনার প্রয়োজনীয় সকল ইনফরমেশন ভালো করে চেক করে নিবেন।
  • পাসপোর্ট অফিস সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১.৩০ মিনিটের মধ্যে জমা দিবেন। 
  • আবেদন ফরমটিতে অবশ্যই আঠা দিয়ে আপনার ছবি লাগাবেন। 
  • আপনি আবেদন ফরম টি কোথায় জমা দেবেন বুঝতে অসুবিধা হলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করুন।

পাসপোর্টের জন্য ছবি তোলার নিয়ম

স্মার্টফোনগুলোতে অত্যাধুনিক ক্যামেরা ব্যবহারের কারণে প্রায় সময় নানা কাজে আমাদের ছবি তুলে থাকি। আবার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রে আমাদের ছবির প্রয়োজন পড়ে থাকে। যেমন, স্কুলে পড়াকালীন সময়ে স্কুল আইডি তৈরি করার জন্যে ছবির প্রয়োজন পড়ে। তেমনি বিদেশ ভ্রমণ করার জন্য পাসপোর্ট তৈরিতে রঙিন ছবির প্রয়োজন পড়ে থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কিভাবে পাসপোট করার জন্য ছবি তুলতে হবে। 

১. আরামদায়ক সাদা পোশাক নির্বাচন করুন। 

২. ছবি তোলার সময় অবশ্যই মনে রাখবেন আপনার ছবিতে যেন স্পষ্ট ভাবে আপনাকে চেনা যায়।

৩. ক্যামেরার সামনে সোজা হয়ে বসবেন। এমনভাবে বসবেন যাতে আপনার ঘাড় সোজা থাকে, মেরুদন্ড সোজা থাকে। 

৪. ফটোগ্রাফার ও ছবি তোলার জায়গা নির্বাচন করুন।

৫. ছবিগুলো প্রিন্ট করার পূর্বে অবশ্যই ভালো করে ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড, কালার এবং পোশাক চেক করে নিবেন। 

অবশ্যই পাসপোর্ট করার সময় পাসওয়ার্ডের ছবিতে যাতে আপনাকে স্পষ্ট ভাবে চেনা যায়, সেই বিষয়গুলো আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। 

পাসপোর্টের জন্য ফিঙ্গার কোথায় দিতে হয়

বিদেশের ভ্রমণ করার জন্য পাসপোর্টের জন্য আবেদন ফর্মটি সঠিকভাবে পূরণ করা হলে, অবশ্যই আপনাকে পাসপোর্ট অফিস থেকে ফিঙ্গার দেওয়ার জন্য ডাকা হবে। পাসপোর্ট পেমেন্ট করে নিমোক্ত কাগজপত্র নিয়ে আপনাকে দেওয়া এপয়েনমেন্ট ডেটে পাসপোর্ট অফিসে চলে যান।ফর্মটি সঠিকভাবে পূরণ করা হলে আবেদন জমা নিবে। 

এরপর পাসপোর্ট অফিসের নির্দিষ্ট কক্ষে আপনার আঙ্গুলের ছাপ দিন, ছবি তুলুন, চোখের স্ক্যান এবং সিগনেচার দিয়ে একটা রশীদ দিবে সেটা নিয়ে ভালো করে দেখুন কোন ইনফরমেশনে ভূল আছে কি না। ভূল দেখতে পেলে সাথে সাথে দ্বায়ীত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানানো উচিত। 

সাধারন পাসপোর্ট কতো দিন পরে পাওয়া যায়?

সকল ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি থাকার কারণে আমাদের অনেক জরুরী ও প্রয়োজনীয় কাজ সমূহ দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে পারি। তেমনি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে খুব দ্রুত বিদেশে গমনের জন্য পাসপোর্ট তৈরি করতে দুই থেকে সাতদিন পর্যন্ত সময় লেগে যায়। 

আর সাধারন ভাবে পাসপোর্ট অফিসে ফিঙ্গার দেওয়ার তারিখ থেকে ১৫ বা ২১ দিনের মধ্যে পেয়ে যাবেন। পাসপোর্ট অফিসের কোন ত্রুটি না থাকলে সঠিক সময়ে আপনার কাঙ্খিত পাসপোর্টটি পেয়ে যাবেন। 

ইমাজেন্সি পাসপোর্ট কতো দিনের মধ্যে দেয়

আমরা বিভিন্ন প্রয়োজনে দেশের বাহিরে ভ্রমন করে থাকি। কিন্তু দেশের ভিতরে ভ্রমণ করা এবং দেশের বাহিরে ভ্রমণ করার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। আমরা যদি খুব দ্রুত সময়ে বিদেশে ভ্রমণ করতে আগ্রহী হয়ে থাকি। তাহলে অবশ্যই পাসপোর্ট করার সময় এ বিষয়টি মনে রাখতে হবে। সাধারণত দ্রুত সময়ে পাসপোর্ট করার জন্য অবশ্যই আমাদেরকে এমার্জেন্সি বা জরুরী পাসপোর্টের জন্য আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। 

বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম অনুসারে এমার্জেন্সি পাসপোর্ট-ভিসা ফিঙ্গার দেওয়ার ২ থেকে ৭ দিনের মধ্যে প্রদান করা হয়। আমাদের দেশের অনেকেই এসব ঝামেলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে ইমার্জেন্সি পাসপোর্ট তৈরী করে নেয়। 

পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফেকেশন কতো দিনের মধ্যে হয়

পাসপোর্ট আবেদন ফরমটি আপনার নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে জমা দেওয়ার কিছুদিন পর পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য আপনাকে ডাকা হতে পারে অথবা পুলিশ সঠিকভাবে ভেরিফিকেশনের জন্য আপনার বাসায় আসতে পারে। এক্ষেত্রে আপনাকে আপনার প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সহ রেডি থাকতে হবে। সঠিকভাবে পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় সাধারণত ১ থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত হয়ে থাকে। 

পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে কি কি লাগে তা তদন্তকারী কর্মকর্তার উপর নির্ভর করে। যেমন, 

  • আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ। 
  • নাগরিক সনদ,
  • ইউটিলিটি বিল,
  • পেশাগত প্রমাণ,
  • বাবা/মায়ের  জাতীয় পরিচয়পত্র,
  • জমি বা ফ্ল্যাটের দলিল ইত্যাদি। 

পাসপোর্ট আবেদন ফর্মে যদি স্থায়ী ঠিকানা এবং বর্তমান ঠিকানা ভিন্ন হয়, তাহলে দুই জায়গাতেই ভেরিফিকেশন হয়ে থাকে। 

পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় আপনার পাসপোর্টে কাগজপত্রে কোন ভুলত্রুটি প্রমাণিত হলে। তাহলে পুরোনো আপনাকে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে পাসপোর্ট সংশোধন ফরম সংগ্রহ করে, ফরমটি আবারো পুনরায় সঠিকভাবে পূরণ করে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ে পুলিশ ভেরিফিকেশন করবে।  

পুলিশ ভেরিফেকেশনের কতো দিন পর পাসপোর্ট পাওয়া যায়

আপনার আবেদন ফরমটি পাসপোর্ট অফিসে জমা দেওয়ার পর পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন পড়ে। সঠিকভাবে পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ হলে ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট অফিসে থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।  

কিন্তু দুঃখের বিষয় হল আমাদের দেশের আইন ব্যবস্থা দুর্নীতিমূলক হওয়ার কারণে সঠিকভাবে পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করা হলেও ৩ থেকে ৪ মাসের পূর্বে পাসপোর্ট পাওয়া সম্ভব হয় না। পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে পুলিশের শরণাপন্ন হতে হবে, বিনিময় আপনাকে টাকা প্রদান করতে হবে।  

অনলাইনে পাসপোর্ট স্টাটাস চেক

পাসপোর্ট ফরম জমা দেওয়া পর পাসপোর্ট অফিস থেকে আপনাকে একটি প্রকট দেওয়া হবে যেখানে আপনার প্রয়োজনীয় সকল তথ্য পাসপোর্ট ডেলিভারি সময় সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য উল্লেখ করা থাকবে এই প্রতিটি আপনি খুব ভালোভাবে চেক করে নিবেন কারণ এই টুকুন অনুসারীদের তথ্য অনুসারে আপনার পাসপোর্ট প্রিন্ট করা হবে কোন ভুল থাকলে সঙ্গে সঙ্গে পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করুন। 

আপনার পাসপোর্টটি টোকন দিয়ে আপনার পাসপোর্ট চেক করার জন্য অবশ্যই www.password. gov.bd এই ওয়েব সাইটে প্রবেশ করুন। এবার Check Status মেন্যুতে ক্লিক করে, Online Registration ID অথবা Application ID এবং জন্ম তারিখ দিন। নিচের I am human দিয়ে Check বাটনে ক্লিক করে পাসপোর্ট চেক করতে পারবেন।

আবার, মোবাইলের মাধ্যমে মেসেজ অপশনে গিয়ে MRP space EID লিখে ৬৯৬৯ নাম্বারে সেন্ড করলেই আপনার দেয়া মোবাইল নাম্বারে আপনার পাসপোর্ট এর সকল তথ্য প্রদান করা হবে। 

প্রিয় পাঠকগণ, আশাকরি আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম এবং প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য সংগ্রহ করতে পেরে বেশ উপকৃত হয়েছেন। আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনার কোন মতামত বা পরামর্শ থাকলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন। 

পাসপোর্ট নিয়ে কিছু প্রশ্ন উত্তরঃ

পাসপোর্ট কাকে বলে?

সরকারি নিয়ম অনুসারে বৈধভাবে কোন দেশে যেকোনো উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য যে সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয় তাই হল পাসপোর্ট।

সাধারন পাসপোর্ট কতো দিন পরে পাওয়া যায়?

বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম অনুসারে এমার্জেন্সি পাসপোর্ট-ভিসা ফিঙ্গার দেওয়ার ২ থেকে ৭ দিনের মধ্যে প্রদান করা হয়।

Leave a Comment